ধর্ষণের পর ভিডিও ছড়ালেন ছাত্রলীগ নেতা আরিফ

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন হাওলাদার স্থানীয় ৬ নারীকে ধর্ষণ করে সেই ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তছনছ হয়ে গেছে ওই ৬ নারীর জীবন।

গত ১৫ অক্টোবর থেকে ভিডিওগুলো ছড়িয়ে পড়ে গ্রামে। এরপর লোকলজ্জার ভয়ে ভিকটিম কোনো নারী মামলা করেননি। তাদের মধ্যে একজন প্রবাসীর স্ত্রী রয়েছেন। তাকে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আরেক গৃহবধূ গ্রাম ছেড়ে চলে গেছেন। ঘটনার শিকার ছাত্রীরা কলেজে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। এক কলেজছাত্রী ভাষ্যÑ আরিফ তাকে শেষ করে দিয়েছে।

জানা যায়, আরিফ গোসলখানায় গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে তার গ্রামের এক গৃহবধূর ভিডিও ধারণ করেন প্রথমে। পরে সেই ভিডিও দেখিয়ে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করেন তাকে। সেটাও গোপনে ভিডিও করেন। সেই ভিডিও এখন এলাকার মানুষের হাতে হাতে। এভাবে ফাঁদে ফেলে ছয় নারীকে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন তিনি। গত ১৫ অক্টোবর থেকে ধর্ষণের ভিডিওগুলো গ্রামের মানুষের মোবাইল ফোনে ছড়িয়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে ভেদরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম সোহাগ জানান, আরিফ এমন চরিত্রহীন, ভয়ংকর মানুষ, তাদের জানা ছিল না। সে একাধিক নারীর সঙ্গে প্রতারণা করে ভিডিও ধারণ করার মাধ্যমে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে। তিনি আরও জানান, ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে তারা ওই এলাকায় যান। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। আর আরিফকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সংগঠন সূত্র জানায়, আরিফ স্থানীয় একটি কলেজের স্নাতক শ্রেণির ছাত্র। ২০১৫ সালের জুন মাসে তাকে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, উপজেলা ছাত্রলীগের পদ থেকে বহিষ্কারের পর আরিফ হোসেন পলাতক রয়েছেন। তাদের বাড়িতেও এখন কেউ নেই।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নাজিমউদ্দিন তালুকদার জানান, আরিফকে হাজির করতে তার বাবাকে বলা হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় সাংসদ ও আওয়ামী লীগের নেতাদেরও জানানো হয়েছে।

শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন জানান, ভেদরগঞ্জের ছাত্রলীগ নেতা যে ঘটনাটি ঘটিয়েছেন, তা বড় ধরনের সাইবার অপরাধ। পুলিশ ওই ছেলেকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে। যে কোনো উপায়ে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।